সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে তাঁকে ট্রিবিউট করে ‘প্রিয় সত্যজিৎ’ নামের সিনেমা বানিয়েছেন প্রসূন রহমান। বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হওয়া সিনেমাটি দেশে মুক্তির অপেক্ষায় আছে। তার আগেই নতুন সিনেমার ঘোষণা দিলেন প্রসূন রহমান। নাম ‘শেকড়’। গতকাল সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনে রাজ
প্রেম, লালসা, বিশ্বাসঘাতকতা ও সত্য—এই চার থিমের ওপর ভিত্তি করে নেটফ্লিক্সের নতুন ছবি ‘রে’। চারটি থিম। চারটি গল্প। কিংবদন্তি নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের চারটি গল্পের আশ্রয়ে বানানো এই ছবিকে বলা হচ্ছে অ্যান্থোলজি ফিল্ম। অর্থাৎ, এক ছবির মোড়কে কয়েকটি গল্প। সত্যজিতের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এ উদ্যোগ নিয়েছে নেটফ্লিক
১০০ বছর আগে (২ মে, ১৯২১) সত্যজিৎ রায় জন্মেছিলেন পরাধীন এক দেশে। ১০০ বছর পরে সত্যজিতের মাতৃভূমি পরাধীন নয়, কিন্তু বিভক্ত কাঁটাতারে। তবে সত্যজিৎ, তাঁর কর্ম ও উত্তরাধিকার অবিভক্ত ও অখণ্ড দুই বাংলায়।
জর্জ সাদ্যুল, আকিরা কুরোসাওয়া ও গ্রিগরি চুখরাই—তাঁরা প্রত্যেকেই সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র–জীবনের এমন কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, যা শুনতে ভালো লাগবে। এটা কোনো নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়তো নয়, কিন্তু একসঙ্গে এই তিনজনকে পাওয়া একটা ব্যাপার বটে।
বড্ড রাশভারী লোক ছিলেন সত্যজিৎ রায়। ছয় ফুটের ওপর উচ্চতা, ভারী কণ্ঠ, আর অসামান্য ব্যক্তিত্ব—রায় বংশের উচ্চতা ও গভীরতা শারীরিক অবয়বেও যেন ধারণ করেছিলেন তিনি। তাঁরই সৃষ্ট ফেলুদা চরিত্রকে যে তিনি নিজের আদলেই রূপায়ণ করেছিলেন, তা আর না বললেও চলে
সত্যজিৎ রায়ের তথ্যচিত্র বেশির ভাগ সময়ই আলোচনার বাইরে রয়ে গেছে। মূলত তাঁর তৈরি করা ফিচার ফিল্মগুলোর দিকেই চোখ থাকে মানুষের
বাঙালি যে খানিক হলেও ভোজনরসিক—এ কথা অস্বীকারের জো কোথায়! ঝাঁঝ আর মিষ্টি খাবার তৈরির ঘনঘটা যেখানে, সেখানে খাবারের প্রতি প্রেম থাকবে না তা কী করে হয়? এই যে কিংবদন্তি সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়, তিনিও এর বাইরে নাকি!
ছোটবেলায় মাথাভর্তি কোঁকড়ানো চুল ছিল সত্যজিৎ রায়ের। কিন্তু কোনো রকম স্টাইল করতে পারেননি। মা সেই বাঁ দিকে সিঁথি করে পাট করে চুল আঁচড়ে দিতেন। কিন্তু সত্যজিৎ যখন বড় হন, তখন ব্যাক ব্রাশ করে চুল আঁচড়ানো শুরু করেন।
সত্যজিৎ রায়ের সিনেমাকে ঘিরে দর্শকদের বিস্ময়, ভালোবাসার অন্ত নেই। এই মুগ্ধতার আড়ালে কখন যে চাপা পড়ে গেছে তাঁর সত্যজিৎ হয়ে ওঠার ইতিবৃত্ত, মনে রাখেনি কেউই। তিনি রাতারাতি বিশ্ববরেণ্য হয়ে ওঠেননি। তাঁর চলার পথেও ছিল শত–সহস্র কাঁটা। যে ইন্ডাস্ট্রিতে বসে তিনি কাজ করেছেন, সেখানকার লোকেরাও তাঁকে ছেড়ে কথা বলেন
প্রথম আলাপে ইন্দ্রপুরের স্টুডিওতে রীতিমতো প্রশ্নবাণে জর্জরিত করছিলেন মানিকদা। আলাপের একপর্যায়ে চিৎকার করে বলে উঠলেন, ‘আমি অনঙ্গ বউ পেয়ে গেছি।’ মনে পড়ে, ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর আগে সিঁথিতে সিঁদুর দেওয়া হয়। সাধারণ একটি শাড়ি পরে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই। বলেছিলেন, ‘মেয়েটি তো দারুণ ফটোজেনিক!’
সত্যজিৎ রায়ের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু নেপথ্য থেকে নিরলস ভূমিকা রেখেছেন যাঁরা, পূর্ণতা দিয়েছিলেন তাঁর কালজয়ী সৃষ্টিকে, তাঁদের কথা কি আড়ালেই থেকে যাবে? তাঁরা পাঁচজন ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের হাতের পাঁচ আঙুল। পাঁচজন বলতে ক্যামেরাম্যান, এডিটর, ফটোগ্রাফার, সেট ডিজাইনার আর মেকআপ আর্ট
ইন্দির ঠাকুরণ অতিশয় বৃদ্ধা। বিধবা। স্বামী-সন্তানহীন। ভাইয়ের ইচ্ছায় পিতৃপ্রদত্ত ভিটার এক ঘরে তাঁর আশ্রয়। দুর্গা-অপুর পিসি তিনি। এ ভিটার বাইরে যাওয়ার তেমন কোনো জায়গাও নেই তাঁর। আপনও কেউ নেই। দুর্গা-অপুকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই দেখেন।
তখনো আমি আজকের ‘অমিতাভ’ হইনি বা বলতে পারেন অভিনেতাই হইনি। সেই সময় সাড়ে পাঁচ বছর আমি কলকাতায় থেকে কাজ করতাম। অভিনয় নয়, অন্য কাজ। তখন আমি সত্যজিৎ রায়ের নাম শুনতাম আর মাঝেমধ্যে রাস্তাঘাটে হয়তো বা কোনো অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখতাম।